এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেকজায়ান্ট ইলন মাস্কের সম্পর্ক এখন তিক্ততায় ঠাসা। ট্রাম্প সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ইলন মাস্ককে উদ্দেশ করে প্রকাশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যেখানে তিনি বলেন, “যদি সে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তবে তার জন্য পরিণতি ভালো হবে না।”
বন্ধুত্বের সূচনা
২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় ইলন মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতিতে পরোক্ষ সমর্থন দিয়েছিলেন। ট্রাম্পও মাস্ককে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন। এমনকি ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে মাস্ক ছিলেন বিভিন্ন পরামর্শ কমিটির সদস্য। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই সম্পর্ক হালকা হতে হতে এখন ঠাণ্ডা যুদ্ধের রূপ নিয়েছে।
উত্তেজনার কারণ কী?
মূল উত্তেজনার সূত্রপাত হয় ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (সাবেক Twitter)-এ ট্রাম্পবিরোধী কিছু কনটেন্টকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। মাস্ক খোলাখুলিভাবে জানান, তিনি এখন এমন প্রযুক্তি নির্মাণে আগ্রহী যা নির্বাচনী স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে – আর তা রিপাবলিকানদের অপছন্দের কারণ হতে পারে।
একই সঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, মাস্ক এখন ডেমোক্র্যাট-ঘেঁষা প্রযুক্তি এলিটদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এবং তাকে থামানোর পরিকল্পনা করছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য
ফ্লোরিডার এক জনসভায় ট্রাম্প বলেন,
“ইলন একটা সময় আমার পাশে ছিল। এখন সে প্রতিপক্ষদের হাত ধরে আমাকে থামাতে চায়। ও যদি ভাবে এভাবে পার পেয়ে যাবে, তাহলে সে ভুল করছে।”
মাস্কের জবাব
ইলন মাস্ক সরাসরি ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাব না দিলেও X-এ এক পোস্টে লেখেন:
“ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে প্রযুক্তিকে দূরে রাখতে হবে – কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়।”
তার এই বক্তব্যকে অনেকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পাল্টা বার্তা হিসেবেই দেখছেন।
ভবিষ্যৎ প্রভাব
এই দ্বন্দ্বের ফলে ২০২৫ সালের মার্কিন নির্বাচনে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ভূমিকা আবারো প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিশেষ করে AI ও সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে জনমত প্রভাবিত করতে পারে, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
উপসংহার
এক সময় একে অপরের প্রশংসাকারী ট্রাম্প ও মাস্ক এখন দাঁড়িয়ে দু’টি বিপরীত মেরুতে। প্রযুক্তি ও রাজনীতির এই দ্বন্দ্ব আগামী দিনে কেবল যুক্তরাষ্ট্রে নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই দিকনির্দেশক হয়ে উঠতে পারে।