প্রতিবেদক: [প্রবন্ধ মিডিয়া ]
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫
ভূমিকা
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা হতে আর খুব বেশি দেরি নেই। প্রতিবছরের মতো এবারও বাজেট নিয়ে জনমনে কৌতূহল, আশা-নিরাশা, বিশ্লেষণ ও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। তবে এবারের বাজেট কিছু বিশেষ কারণে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে—বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা, মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, রিজার্ভ চাপ, তরুণদের কর্মসংস্থান সংকট এবং রাজনৈতিক উত্তাপের পটভূমি থেকে।
এই প্রতিবেদনটিতে আমরা বিশ্লেষণ করব, বাজেট সামনে রেখে কী কী সম্ভাব্য পরিবর্তন আসতে পারে, এবং তা সাধারণ মানুষের জীবনে কী প্রভাব ফেলতে পারে।
বাজেটকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রধান পরিবর্তনসমূহ
১. মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বৃদ্ধি
বাজেট ঘাটতি পূরণ করতে সরকার কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট বাড়াতে পারে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে আমদানি-নির্ভর ভোগ্যপণ্য, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক্স ও গাড়ির ক্ষেত্রে।
২. নগদ সহায়তা বা ভর্তুকির পুনর্বিন্যাস
জ্বালানি, বিদ্যুৎ, কৃষি ও গ্যাস খাতে ভর্তুকির পরিমাণ পুনর্বিন্যাস হতে পারে। এতে কিছু খাত লাভবান হলেও অন্য কিছু খাতে খরচ বাড়তে পারে।
৩. তরুণ ও শিক্ষিত বেকারদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান কর্মসূচি
নতুন বাজেটে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, স্টার্টআপ সহায়তা ও আইটি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে নতুন প্রকল্প যুক্ত হতে পারে।
৪. স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বৃদ্ধির সম্ভাবনা
কোভিড-পরবর্তী বাস্তবতায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে, তবে বাস্তবায়নের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ রয়ে গেছে।
৫. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ গুরুত্ব
খাদ্য মূল্যবৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মাথায় রেখে কৃষিখাতে প্রযুক্তিনির্ভর বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকতে পারে।
সাধারণ জনগণের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব
দিকসম্ভাব্য প্রভাব পণ্যমূল্যভ্যাট-শুল্ক বৃদ্ধিতে বাজারে দ্রব্যমূল্য আরও বাড়তে পারে🧾 বেতন ও করকরমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়ানো হতে পারে, তবে মধ্যবিত্তের ওপর কর চাপ বাড়ার আশঙ্কা চাকরিসরকারি খাতে নতুন নিয়োগ সীমিত হলেও বেসরকারি ও আইটি খাতে উদ্যোগ বাড়ানো হতে পারে গৃহঋণ ও ব্যাংক ঋণসুদহার বৃদ্ধির প্রবণতায় ঋণ গ্রহণ ব্যয়বহুল হতে পারে শিক্ষাসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ বাড়তে পারে
বাজেটের চ্যালেঞ্জ
বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপ
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ
বৈদেশিক ঋণ শোধ
দুর্নীতি ও অপচয় রোধ
কৃষি ও শ্রমজীবীদের দাবি মানা
করণীয় ও সুপারিশ
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
স্মার্ট বাজেট বাস্তবায়নে প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানো
মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য সহনশীল করনীতি
পরিকল্পনার চেয়ে বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়া
তরুণদের জন্য উদ্যোক্তা সহায়ক প্রকল্প চালু করা
উপসংহার
জাতীয় বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের খাতা নয়, এটি একটি দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আস্থার পরিবেশ গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তাই এই বাজেটের প্রতিটি পদক্ষেপ হওয়া উচিত জনমুখী, বাস্তবভিত্তিক ও স্বচ্ছ।