<ভূমিকা>
২০২৫ সালের মে মাসে, বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের এক সংকটময় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (WMO) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে, যার সম্ভাবনা ৭০%।
<বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বর্তমান চিত্র>
রেকর্ড তাপমাত্রা: ২০২৪ সাল ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর, এবং ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে অন্তত একটি বছর এই রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা ৮০%।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের বৃদ্ধি: উষ্ণায়নের ফলে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা এবং দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে ৫৭,০০০ একর জমি পুড়ে যায়।
গ্লেসিয়ার ধস: ২০২৫ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের ব্লাটেন গ্রামে একটি গ্লেসিয়ার ধসে পড়ে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পারমাফ্রস্ট দুর্বল হওয়ার ফল।
<মানব জীবনে প্রভাব>
স্বাস্থ্য ঝুঁকি: উচ্চ তাপমাত্রা হিট স্ট্রোক, হিট এক্সহস্টন এবং অন্যান্য তাপ-সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
খাদ্য নিরাপত্তা: খরা ও বন্যার কারণে কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে।
আবাসন সংকট: সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক মানুষ বাসস্থান হারাচ্ছে।
করণীয়
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার: জ্বালানি খাতে নবায়নযোগ্য উৎসের ব্যবহার বাড়িয়ে কার্বন নিঃসরণ কমানো।
বনায়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ: বনাঞ্চল রক্ষা ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কার্বন শোষণ বৃদ্ধি করা।
সচেতনতা বৃদ্ধি: সাধারণ মানুষের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে পরিবেশবান্ধব আচরণ উৎসাহিত করা।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
<উপসংহার>
জলবায়ু পরিবর্তন এখন আর ভবিষ্যতের হুমকি নয়; এটি বর্তমানের বাস্তবতা। এই সংকট মোকাবেলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি, নইলে ভবিষ্যতে এর পরিণতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।