গাইবান্ধার পথসভায় ‘অস্তিত্ব সংকটে’ শেখ হাসিনার দেশত্যাগের অভিযোগ এনেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম।
তাঁর ভাষায়, “ছাত্র ও জনতার যৌথ প্রতিরোধেই হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।” যদিও এই বক্তব্য রাজনৈতিক মঞ্চের প্রতিক্রিয়া, তা গণতন্ত্র, প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্র তুলে ধরে।
বক্তব্যের ব্যাকড্রপ ও বিশ্লেষণ
সারজিস আলমের বক্তব্যটি শুধুই একটি রাজনৈতিক রণকৌশল নাকি গণআন্দোলনের প্রতিফলন? রাজনীতিতে ‘অস্তিত্ব সংকট’, ‘পালিয়ে যাওয়া’ বা ‘গণঅভ্যুত্থান’ — এই শব্দগুলো কেবল প্রতিপক্ষকে আক্রমণ নয়, বরং জনমতের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণকেও জন্ম দেয়।
এ ধরনের বক্তব্য সাধারণত তখনই উঠে আসে যখন রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য বিপর্যয়ের পথে থাকে বা সরকারবিরোধী আন্দোলনের গতি বাড়ে। তবে বক্তব্যের যথার্থতা নির্ধারিত হয় প্রমাণ, সময় ও জনগণের মতামতের ওপর।
রাজনীতিতে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ভূমিকা
বক্তব্যে একটি শিক্ষণীয় দিক হলো— শুধু ছাত্র নয়, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, সকল বড় আন্দোলনেই সাধারণ মানুষ ছিলেন মূল চালিকাশক্তি। ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ২০১৩-তে গণজাগরণ মঞ্চ— এসবই ছাত্র-জনতার মিলিত চেতনার ফসল।
রাজনীতি মানেই কি শত্রুতার খেলা?
সারজিস বলেন, “ভালো মানুষকে ভোট দিন, দাসত্ব নয়।”
এই কথার মধ্যে একটা সুস্থ গণতান্ত্রিক বার্তা আছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতির পরিবর্তে যদি যোগ্যতা, সততা, ও জনকল্যাণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তবেই রাজনৈতিক শুদ্ধতা ফিরতে পারে।
ভবিষ্যতের শিক্ষা ও ভাবনা
এই ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে, তবে তা একটি স্বাধীন সমাজে মত প্রকাশের চর্চা হিসেবেও দেখা যায়। জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা যদি কাণ্ডজ্ঞান ও বিশ্লেষণী মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে, তাহলে রাজনৈতিক উত্তেজনা নয়, গণতন্ত্রই শক্তিশালী হবে।
সারজিস আলমের বক্তব্য প্রাসঙ্গিক হোক বা রাজনৈতিক উত্তেজনার অংশ— তাতে একটাই শিক্ষা: গণতন্ত্রে জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণই হলো চূড়ান্ত শক্তি। আর রাজনীতি যদি হয় জনগণের কল্যাণে, তবে নেতাদের কাজ হওয়া উচিত যুক্তির রাজনীতি, হুমকির নয়।